কানে কিলয়েড (Keloid)

এক ধরনের স্কার যা শরীরের কোনো আঘাত বা সার্জারির পর অতিরিক্ত কোষ বৃদ্ধির কারণে তৈরি হয়।

এটি সাধারণত কানের পেছনে বা কানের লোবে/লতি এমনকি নরম হাড়/তরুনাস্থিতে হয়, যেখানে কান ফুঁড়ানো বা ছোটখাটো ক্ষত বা কাটা সৃষ্টি হয়।

কিলয়েডের কারণ:

কিলয়েড তখন সৃষ্টি হয় যখন শরীর স্কার টিস্যু তৈরি করতে অতিরিক্ত কোষ তৈরি করে, যা স্বাভাবিকভাবে নিরাময় প্রক্রিয়ার অংশ হয়। তবে কিলয়েডের ক্ষেত্রে এই টিস্যু বৃদ্ধি অস্বাভাবিকভাবে হয় এবং এটি সাধারণত সংলগ্ন ত্বকের চেয়ে উচ্চতর হয়ে ওঠে। কিলয়েডের জন্য কিছু সাধারণ কারণ হতে পারে:

  • কানে ছিদ্র করা বা পিয়ারসিং।
  • সজীব কাটা বা সার্জারি।
  • কানে ট্রমা বা আঘাত।
  • ত্বকের সংক্রমণ বা চোট।

কিলয়েডের লক্ষণ:

  • উচ্চতা: কিলয়েড সাধারণত ত্বকের উপরে উঁচু হয়ে থাকে এবং এটি লাল, গারো, বা সাদাটে রঙ ধারণ করতে পারে।
  • ব্যথা: কিছু কিলয়েড ব্যথা বা অস্বস্তি তৈরি করতে পারে, বিশেষত যদি চাপ বা ঘর্ষণ হয়।
  • উৎকটতা: কিলয়েডের পরিমাণ ও আকার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে পারে, এটি অনেক সময় খুবই বড় হয়ে যেতে পারে।

কিলয়েডের চিকিৎসা:

কিলয়েড সাধারণত স্বাভাবিকভাবে সেরে যায় না এবং অনেক সময় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে, যার মাধ্যমে কিলয়েড কমানো যায়:

  • কোর্টিকোস্টেরয়েড ইনজেকশন: কিলয়েডের আকার কমাতে বা এটিকে সমান করতে এই ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়।
  • লেজার থেরাপি: কিলয়েডের রঙ এবং আকার কমাতে লেজারের ব্যবহার করা হয়।
  • কিলয়েড রিমুভাল সার্জারি: যদি কিলয়েড বড় হয় এবং চিকিৎসার সাথে সারে না, তবে এটি সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করা যায়। তবে, কিলয়েড অপসারণের পর এটি আবার তৈরি হতে পারে।
  • সিলিকন গিল্ডস বা স্কার প্যাচ: কিলয়েডের উপর সিলিকন গিল্ডস প্রয়োগ করা হয় যা স্কার গঠন কমাতে সাহায্য করে।
  • ক্রীম বা সালভ: কিছু ক্রীম বা সালভ ব্যবহারে কিলয়েডের বৃদ্ধি কমানো যেতে পারে।

কিলয়েডের প্রতিরোধ:

কিলয়েডের সৃষ্টি কিছুটা প্রতিরোধ করা যেতে পারে, তবে এটি ১০০% প্রতিরোধযোগ্য নয়। কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে এর সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে:

  • কোনো আঘাতের পরে ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার রাখা এবং সংক্রমণ থেকে বিরত থাকা।
  • যদি পিয়ারসিং বা অন্য কোনো সার্জারি করতে হয়, তবে সেটি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে করা উচিত।
  • কিলয়েডের ইতিহাস থাকলে, নতুন আঘাত থেকে সাবধান থাকা উচিত।

আপনি যদি কানে কিলয়েড নিয়ে চিন্তা করেন, তবে একজন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা সবচেয়ে ভালো।


ডাঃ আলমগীর মোঃ সোয়েব

এমবিবিএস (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল), ডিএলও (বিএসএমএমইউ, সাবেক পিজি হাসপাতাল)।
কানের মাইক্রো ইয়ার সার্জারী ও নাকের সাইনাস সার্জারীর উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত (রামাইয়া ইউনিভার্সিটি অব এপলাইড সায়েন্স – ইন্ডিয়া)।
সিনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি),
মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল, জিইসি, চট্টগ্রাম।
যোগাযোগ: ০১৯৭৮১১৭৩৭১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *